মায়ানমারের সেনাবাহিনী অং সান সু চি এবং সাবেক প্রেসিডেন্ট উইন মিন্টকে কারাগার থেকে বের করে গৃহবন্দী করেছে। সেনাবাহিনী জানিয়েছে, দেশে প্রচণ্ড গরম ও তাপপ্রবাহের কারণে উভয় নেতাকে কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
তবে তাদের কোথায় রাখা হয়েছে তা জানায়নি সেনাবাহিনী। মায়ানমারে গরমের কারণে তাপমাত্রা ৩৯ ডিগ্রিতে পৌঁছেছে। একইসঙ্গে অং সানের আইনজীবী ইংরেজি পত্রিকা দ্য গার্ডিয়ানকে বলেছেন, কাউকে তার সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হচ্ছে না। সে অসুস্থ এবং কিছু খেতে পারছে না।
10 বছর আগে সেনা অভ্যুত্থান করেছিল
2021 সালের 1 ফেব্রুয়ারি মায়ানমারে সেনাবাহিনী একটি অভ্যুত্থান ঘটায়। এরপর স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চি এবং প্রেসিডেন্ট উইন মিন্ট সহ অনেক নেতাকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর থেকে তার বিরুদ্ধে ডজনের বেশি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে অনেক মামলায় তিনি দোষী সাব্যস্তও হয়েছেন।
তিনি বর্তমানে রাজধানী নাপিতায় 27 বছরের সাজা ভোগ করছেন। এরপর সামরিক নেতা জেনারেল মিন অং হ্লাইং নিজেকে দেশের প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেন। দেশটিতে 2 বছরের জরুরি অবস্থা জারি করেছিল সেনাবাহিনী। যদিও পরে তা বাড়ানো হয়।
নির্বাচনের পর সরকার ও সেনাবাহিনীর মধ্যে মতবিরোধ দেখা দেয়
আসলে, 2020 সালের নভেম্বরে মায়ানমারে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এর মধ্যে উভয় কক্ষেই অং সান সু চির দল 396টি আসন পেয়েছে। যেখানে বিরোধী ইউনিয়ন সলিডারিটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি উভয় কক্ষে মাত্র 33 টি আসন পেয়েছে। সেনাবাহিনীর সমর্থন ছিল এই দলের।
ফলাফল আসার পর তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে সেনাবাহিনী। সেনাবাহিনী সু চির দলের বিরুদ্ধে নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ এনেছিল। নির্বাচনের ফলাফলের পর সরকার ও সেনাবাহিনীর মধ্যে মতপার্থক্য শুরু হয়, এরপর সেনাবাহিনী অভ্যুত্থান ঘটায়।
মায়ানমারে অভ্যুত্থানের পর থেকে সেনাবাহিনী 6 হাজার মানুষকে হত্যা করেছে
পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, 2021 সালে মায়ানমারে অভ্যুত্থানের পর থেকে সেনাবাহিনী 6 হাজার মানুষকে হত্যা করেছে। মিয়ানমারও তার বিরোধীদের ক্রমাগত মৃত্যুদণ্ড দিচ্ছে। দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মায়ানমারে বিমান হামলা নিত্যদিনের গল্প হয়ে উঠছে। প্রতিপক্ষকে খুঁজে বের করতে সেনাবাহিনী কোনো কসরত রাখছে না। এ কারণে তিনি সাধারণ মানুষকে টার্গেট করছেন।