এপ্রিলের একটি সোমবার কলকাতায় আগের দিনের চেয়ে বেশি গরম হয়েছে মাত্র একবার। শহরের তাপমাত্রার রেকর্ড এমনটাই বলছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। সোমবার, কলকাতায় দিনের তাপমাত্রা ছিল 41.7 ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে শেষবার 1980 সালের এপ্রিল মাসে কলকাতায় দিনের তাপমাত্রা এতটা বেড়ে গিয়েছিল। সোমবার সেই রেকর্ডে পৌঁছে গেল কলকাতা। কিন্তু শীর্ষ অবস্থান এখনও 25 এপ্রিল, 1954 এ রয়ে গেছে। সেদিন কলকাতায় দিনের তাপমাত্রা ছিল 43.3ডিগ্রি সেলসিয়াস!
আলিপুর আবহাওয়া দপ্তরের কাছে 1954 থেকে 1969 সাল পর্যন্ত শহরের তাপমাত্রার কোনও রেকর্ড নেই৷ আবহাওয়া অফিসের রেকর্ড অনুসারে, 1970 সাল থেকে গত রবিবার পর্যন্ত কলকাতার সর্বোচ্চ এপ্রিলের তাপমাত্রা ছিল 41.7 ডিগ্রি সেলসিয়াস। 1980 সালের 25 এপ্রিল কলকাতায় এটি ছিল দিনের তাপমাত্রা। মানে 41.7 ডিগ্রি সেলসিয়াস। 25 এপ্রিল 2024-এ কলকাতায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল 41.6 ডিগ্রি সেলসিয়াস। সোমবারের পারদ তাকে ছাপিয়ে গেল। এর মাধ্যমে ছুঁয়ে গেল 1980 সালের এপ্রিলের একদিনের রেকর্ড। সোমবার কলকাতায় তাপমাত্রা স্বাভাবিকের থেকে 6.1 ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি ছিল।
এপ্রিল মাসে কলকাতার তাপমাত্রা যে 40 ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরে যায় না তা নয়। 2011 সালের পর, কলকাতায় এপ্রিলে তিনবার তাপমাত্রা 41 ডিগ্রি সেলসিয়াস অতিক্রম করে। 2014 সালের 26 এপ্রিল কলকাতায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল 41.2 ডিগ্রি সেলসিয়াস। 12 এপ্রিল 2016-এ 41.3 ডিগ্রি সেলসিয়াস। 14 এপ্রিল, 2023 তারিখে, কলকাতায় দিনের তাপমাত্রা ছিল 41 ডিগ্রি সেলসিয়াস। কলকাতায় এপ্রিলের তাপমাত্রা কয়েকবার 41 ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে গেলেও একটানা এত গরম কখনও পড়েনি।
গত কয়েকদিন ধরে শহরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা প্রায়ই 40 ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরে ছিল। তাপপ্রবাহ চলছে। গ্রীষ্মের এই দীর্ঘ ‘স্পেল’ কলকাতায় বেশ বিরল। প্রকৃতপক্ষে, গত 50 বছরে, এপ্রিল মাসে তাপের এত তীব্রতা এবং অব্যাহততা রাজ্যে এক সাথে দেখা যায়নি। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের আধিকারিক সৌরিশ বন্দ্যোপাধ্যায়ও একথা জানিয়েছেন। বৃষ্টি না হওয়ায় গরম বেড়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, কালবৈশাখীর কারণে এপ্রিলে শহরে প্রচণ্ড গরম থাকবে না। এবার সেই কালবৈশাখীর দেখা নেই। এ কারণে অস্থিরতা বেড়ে যায়। এতে আতঙ্কে রয়েছেন নগরবাসী। রাতেও বিশ্রাম নেই। বায়ু দফতর জানিয়েছে যে আপাতত এই পরিস্থিতি থেকে কোনও স্বস্তি পাওয়া যাবে না। বৃষ্টির কোনো সম্ভাবনা নেই।
আগামী পাঁচদিন নগরীর তাপমাত্রায় খুব একটা পরিবর্তন হবে না। বিকেলে শহরের রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছে কয়েকজন। দোকানপাট বন্ধ। নাভানের নির্দেশে সরকারি স্কুলগুলিও বন্ধ রয়েছে। বেশিরভাগ বেসরকারি স্কুলের ক্লাস অনলাইনে পরিচালিত হয়। এমনকি রাতেও শহরের বাসিন্দারা প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হন না। এখন তাদের একটাই প্রশ্ন কবে বৃষ্টি হবে? এমনকি আবহাওয়া অধিদপ্তরের কাছেও এর উত্তর নেই।