ইউনিফর্ম সিভিল কোড বিল উত্তরাখণ্ড বিধানসভায় কণ্ঠভোটে পাস হয়েছে। এর সাথে, উত্তরাখন্ড দেশের প্রথম রাজ্য হয়ে উঠেছে যার বিধানসভায় ইউনিফর্ম সিভিল কোড বিল পাস হয়েছে। সিএম পুষ্কর ধামি বিধানসভায় ইউনিফর্ম সিভিল কনস্টিটিউশন বিলের বিষয়ে বলেছেন যে ইউনিফর্ম সিভিল কোড শুধুমাত্র উত্তরাখণ্ডের জন্য নয়, সমগ্র ভারতের জন্য একটি মাইলফলক হিসেবে প্রমাণিত হবে। দেবভূমি থেকে উৎপন্ন গঙ্গা কিছু জায়গায় সেচ এবং অন্য জায়গায় পান করার জন্য কাজ করে। সমঅধিকারের গঙ্গা সকল নাগরিকের অধিকার রক্ষা ও নিশ্চিত করবে। সংসদে ইউসিসি বিলের ওপর আলোচনার জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। সিলেক্ট কমিটিকে হাউসে পাঠানোর বিরোধীদের প্রস্তাব খারিজ হয়ে যায়। একই সঙ্গে বিধানসভায় কণ্ঠভোটে বিলটি পাস হয়। এরপর সংসদের কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য মুলতবি করা হয়।
তিনি বলেন, আমরা বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্যের কথা বলেছি। সংবিধান সব নাগরিকের জন্য সমান আইনের কথা বলে। সংবিধান ধর্মনিরপেক্ষ। সংবিধানের অদ্ভুততা। সংবিধান তাদের অপসারণ করে সামাজিক কাঠামোকে শক্তিশালী করতে চায়।
ধামি বলেন, আমাদের একটি অভিন্ন নাগরিক বিধি দরকার। দেশ যেভাবে এগিয়েছে। ভোটব্যাংকের ঊর্ধ্বে উঠতে হবে। মরিয়দা পুরুষোত্তম রাম আমাদের আদর্শ। সাম্যের আদর্শ ছিলেন শ্রী রাম। আমরা একই ধরনের সমতার কথা বলছি। তিনি বলেন, গতকাল বিলটি আনার সময় বাবা সাহেবের স্লোগান ওঠে। ডঃ শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ও এই সাম্যের সমর্থক ছিলেন। একই সমতার কথা বলা হয়েছে।
তিনি বলেন, এত দীর্ঘ সময় এবং সংখ্যাগরিষ্ঠ থাকার পরও কেন সমতা আনার কথা হয়নি? কেন মাতৃশক্তিকে সমান অধিকার দেওয়া হয়নি? কেন ভোটব্যাংক দেশের ঊর্ধ্বে রাখা হলো? কেন সম্প্রদায়ের মধ্যে বৈষম্যের ফাঁক খোঁড়া হয়েছিল?
মাতৃশক্তি পাবে সমান অধিকার
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী প্রায়ই বলেন এটাই সঠিক সময়। ইউনিফর্ম সিভিল কোড সবাইকে সমান অধিকার দেবে। সকল নাগরিকের মৌলিক অধিকার প্রদান করবে। এটি বিভিন্ন শ্রেণীর মা, বোন ও কন্যাদের প্রতি বৈষম্য ও অবিচারের অবসানে সহায়ক প্রমাণিত হবে। মাতৃশক্তির অত্যাচার বন্ধ করার সময় এসেছে। মা, বোন ও মেয়ের প্রতি বৈষম্য বন্ধ করা যায়।
তিনি বলেন, অর্ধেক জনসংখ্যাকে সমান মর্যাদা দিতে হবে। সময় এসেছে আমাদের মাতৃশক্তিকে সম্পূর্ণ ন্যায়বিচার দেওয়ার। যে কাজ আজ বিধানসভা করছে। যারা এই আইনে অংশগ্রহণকারী হয়েছেন তাদের একটি ভগ্নাংশ মাত্র। তাদেরকে পুণ্যের অংশীদার হতে হবে। এটি অনেক মানুষের জীবনে পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে।
তফসিলি উপজাতিদের ইউনিফর্ম সিভিল কোড থেকে আলাদা রাখা হয়েছে
তিনি বলেছিলেন যে তুষ্ট করার জন্য বাবা সাহেব আম্বেদকরের চিন্তাভাবনা ভুলে গেছেন। অতীতে যে ভুলগুলো হয়েছে সেগুলো সংশোধন করে কাজ করতে হবে। স্বাধীনতার এতদিন পরেও কেন তা সম্পন্ন হয়নি? সুপ্রীম কোর্ট সময়ে সময়ে ইউনিফর্ম সিভিল কোডের কথা বলেছে। রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের জন্য কত পরামর্শ বর্জ্যের ঝুড়িতে ফেলে দেওয়া হয়। তিনি বলেন, বিশ্বের দেশগুলো অভিন্ন নাগরিক বিধি নিশ্চিত করেছে।
তিনি বলেন, এই কোডের মাধ্যমে আমরা প্রত্যেক মানুষকে সমান অধিকার দিতে সক্ষম হব। তফসিলি উপজাতিদের এই কোড থেকে আলাদা রাখা হয়েছে। ভারতের সংবিধানের 342 অনুচ্ছেদ, যা সুরক্ষা প্রদান করে। সে অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া বিবাহ কেবল একজন পুরুষ এবং একজন মহিলার মধ্যেই হতে পারে। সব ধরনের শিশুর অধিকার রক্ষায় মনোযোগ দেওয়া হয়েছে। কোডে, সম্পত্তি মানে সকল প্রকার স্থাবর ও অস্থাবর। বর্তমানে বিবাহবিচ্ছেদ সংক্রান্ত অনেক আইন বলবৎ ছিল। এতে সমতা আনার চেষ্টা করা হয়েছে।
ইউনিফর্ম সিভিল কোডে নারী ও পুরুষের সমান অধিকার
তিনি বলেন, এই কোডে বিয়ের বয়স পুরুষদের জন্য 21 বছর এবং মহিলাদের জন্য 18 বছর নির্ধারণ করা হয়েছে। নারী-পুরুষকে সমান মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। এ আইন লঙ্ঘন করলে তিন বছরের কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে। স্বামী/স্ত্রীর মধ্যে একজন জীবিত থাকলে দ্বিতীয় বিয়ে নিষিদ্ধ। বিবাহ এবং বিবাহ বিচ্ছেদের নিবন্ধন আবশ্যক হবে। শুধুমাত্র সেই সমস্ত দম্পতিরা যারা তাদের বিবাহ নিবন্ধন করিয়েছেন তারা সমস্ত সরকারি সুযোগ সুবিধা পেতে সক্ষম হবেন।
তিনি বলেন, সম্পত্তিতে সব শিশুকে সমান অধিকার দেওয়া হয়েছে। সম্পত্তির অধিকারে সমতা দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে অবৈধ সন্তানের মত শব্দ দূর করার জন্য। যারা লিভ-ইন রিলেশনে আছেন তাদের রেজিস্ট্রেশন করতে হবে।