সোমবার গভীর রাত থেকে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত সংযুক্ত আরব আমিরাতের অনেক অংশে ভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত ছিল, তারপরে পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। রাজধানী দুবাইয়ে টানা বৃষ্টির পর বন্যার মতো পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। দুবাইয়ের রাস্তাঘাট, বাড়িঘর ও মল প্লাবিত হয়েছে। প্রবল বৃষ্টির মধ্যে সতর্কতা জারি করেছে কর্তৃপক্ষ। জাতীয় আবহাওয়া কেন্দ্র দেশের অনেক এলাকায় রেড অ্যালার্ট জারি করেছে এবং জনগণকে ‘সতর্ক’ থাকার আহ্বান জানিয়েছে। বুধবার সন্ধ্যা 6 টা পর্যন্ত এ সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
বৃষ্টির বিপর্যয়
দুবাই ছাড়াও ওমানেও ভারি বর্ষণ বিপর্যস্ত করেছে। বৃষ্টির কারণে এখানে 18 জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া আবুধাবি ও আল আইনের মতো শহরে ভারী বর্ষণে বন্যার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। অনেক বড় হাইওয়ে এবং বিমানবন্দর প্লাবিত হয়েছে, যার কারণে বিমান চলাচল খারাপভাবে প্রভাবিত হয়েছে। ভারী বর্ষণে বহু মানুষ নিখোঁজ হওয়ার খবরও পাওয়া গেছে।
মানুষকে দেওয়া পরামর্শ
খালিজ টাইমস জানায়, বুধবার পর্যন্ত দুবাই, আবুধাবি ও শারজাহসহ অনেক এলাকায় ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে জাতীয় আবহাওয়া কেন্দ্র। আহমেদ হাবিব, যিনি জাতীয় আবহাওয়া কেন্দ্রে কাজ করেন, বলেন, “শুধু ভারী বৃষ্টি নয়, দুবাই, আবুধাবি, শারজাহ এবং আমিরাতের অন্যান্য জায়গায় শিলাবৃষ্টিরও সম্ভাবনা রয়েছে।” বন্যাপ্রবণ এলাকা থেকে দূরে নিরাপদ ও উঁচু স্থানে যানবাহন পার্ক করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বৃষ্টির কারণে লোকজনকে মসজিদের পরিবর্তে ঘরে নামাজ পড়তে বলা হয়েছে। আধিকারিকরা শুধুমাত্র প্রয়োজনে বাড়ির বাইরে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
জল শুধু জল, বৃষ্টি সমস্যা বাড়িয়ে দিল
প্রবল বৃষ্টি ও ঝড়ের কারণে দুবাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে জল দেখা গেছে। 50 টিরও বেশি ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। দুবাই বিমানবন্দরের একজন মুখপাত্র বলেছেন যে প্রবল ঝড়ের কারণে সমস্যাটি হয়েছিল তবে এখন পুনরুদ্ধার মোডে রয়েছে। বৃষ্টির কারণে দুবাই মেট্রোর রেড লাইন পরিষেবা ব্যাহত হয়েছে। অনেক মেট্রো স্টেশন প্লাবিত হয়েছে। দুবাই থেকে আবুধাবি, শারজাহ এবং আজমান পর্যন্ত বাস পরিষেবাও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি এমন দাঁড়ায় যে এমনকি বড় বড় শপিং সেন্টার, দুবাই মল এবং আমিরাতের মল প্লাবিত হয়।
স্কুল বন্ধ
আমরা আপনাকে বলি যে সংযুক্ত আরব আমিরাত একটি মরুভূমির দেশ যেখানে বৃষ্টি একটি অস্বাভাবিক ঘটনা। এদিকে ভারী বৃষ্টির কারণে সংযুক্ত আরব আমিরাত জুড়ে স্কুল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। শিলাবৃষ্টির সঙ্গে ঝড়েরও সম্ভাবনা রয়েছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের কিছু এলাকায় 24-ঘন্টা সময়ের মধ্যে 80 মিলিমিটার (3.2 ইঞ্চি) বেশি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে, যা বার্ষিক গড় থেকে বেশি।
