ISRO এবং NASA একসাথে একটি পৃথিবী পর্যবেক্ষণ রাডার মিশন চালু করবে। এর নাম দেওয়া হয়েছে নিসার। এই রাডার মিশন জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণিত হতে পারে। এর সাহায্যে বন ও জলাভূমি (আদ্রতা বা জলাভূমিযুক্ত এলাকা) পর্যবেক্ষণ করা যেতে পারে।
আসলে, মহাকাশ সংস্থাগুলি বন এবং জলাভূমিতে কার্বন বৃত্তের উপর কী প্রভাব ফেলছে এবং কীভাবে এটি জলবায়ু পরিবর্তন ঘটাচ্ছে তা খুঁজে বের করতে চায়। এর মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা আসন্ন দুর্যোগ সম্পর্কে আগাম তথ্য জানতে পারবেন।
2024 সালে NISAR চালু হবে
ISRO বলেছে যে NISAR স্যাটেলাইটটি 2024 সালের প্রথম দিকে চালু করা যেতে পারে। এটি প্রতি 12 দিনে সমগ্র পৃথিবী এবং হিমবাহ বিশ্লেষণ করে পৃথিবীর কক্ষপথে উৎক্ষেপণ করা হবে। এ থেকে প্রাপ্ত তথ্য থেকে জানা যাবে কার্বন নিয়ন্ত্রণে বন ও জলাভূমি কতটা গুরুত্বপূর্ণ।
আসলে, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় বন ও জলাভূমি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এগুলোর কারণে পরিবেশে গ্রিনহাউস গ্যাস নিয়ন্ত্রিত হয়।
নিসার কি ধরনের স্যাটেলাইট?
এই স্যাটেলাইটটি একটি আধুনিক এসইউভির আকার, যা দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ার নাসার জেট প্রপালশন ল্যাবরেটরি (জেপিএল) এ তৈরি করা হয়েছে। ISRO বলেছে যে এটি আমাদের বিশাল সম্ভাবনার উদাহরণ। এই 2,800 কেজি স্যাটেলাইটে একটি 39-ফুট ফিক্সড অ্যান্টেনা প্রতিফলক রয়েছে যা সোনার ধাতুপট্টাবৃত তারের জাল দিয়ে তৈরি। এটি অ্যান্টেনার ক্ষুদ্রতম পরিবর্তনগুলিও সনাক্ত করার ক্ষমতা।
কত দূরত্বে ছবি তুলবে?
স্যাটেলাইটটি টানা পাঁচ বছর কাজ করবে বলে আশা করা হচ্ছে। ISRO এই প্রকল্পে 788 কোটি টাকা অবদান রেখেছে, আর NASA 808 মিলিয়ন ডলার অবদান রেখেছে। এর রাডার এত শক্তিশালী হবে যে এটি 240 কিলোমিটার পর্যন্ত একটি এলাকার পরিষ্কার ছবি তুলতে সক্ষম হবে। পৃথিবীর চারপাশে একটি আবর্তন সম্পূর্ণ করতে 12 দিন সময় লাগবে।
আপনি কি তথ্য দেবেন?
এই স্যাটেলাইট টর্নেডো, ঝড়, আগ্নেয়গিরি, ভূমিকম্প, হিমবাহ গলে যাওয়া, সামুদ্রিক ঝড়, দাবানল, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, কৃষিকাজ, ভেজা জমি, বরফ হ্রাস ইত্যাদি সম্পর্কে আগাম তথ্য দেবে। পৃথিবীর চারপাশে জমে থাকা আবর্জনা এবং মহাকাশ থেকে পৃথিবীর দিকে আসা বিপদের তথ্যও পাওয়া যাবে এই স্যাটেলাইট থেকে। গাছ-গাছালির সংখ্যা ক্রমবর্ধমান ও হ্রাসের দিকে নজর রাখবে। আলোর হ্রাস-বৃদ্ধির তথ্যও নিসারের কাছ থেকে পাওয়া যাবে।
ভারতের সীমান্তে কড়া নজর রাখবে
হ্যাঁ, এই স্যাটেলাইট থেকে প্রাপ্ত উচ্চ-রেজোলিউশনের ছবিগুলি ভারত ও আমেরিকার সরকারকে হিমালয়ের হিমবাহগুলি পর্যবেক্ষণে সাহায্য করবে৷ এটি চীন এবং পাকিস্তানের সাথে ভারতের সীমান্তের উপর কড়া নজর রাখতে সরকারকে সাহায্য করতে পারে।
কেন এটা ভারতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ?
ISRO 1979 সাল থেকে 30 টিরও বেশি পৃথিবী পর্যবেক্ষণ উপগ্রহ উৎক্ষেপণ করেছে। এর উদ্দেশ্য হল ভাল পরিকল্পনা, কৃষি এবং আবহাওয়া সম্পর্কিত স্থান ইনপুট প্রাপ্ত করা। NISAR সিন্থেটিক অ্যাপারচার রাডার দিয়ে সজ্জিত, যা দেশের অন্য যেকোনো উপগ্রহ থেকে প্রাপ্ত ছবির তুলনায় অত্যন্ত উচ্চ রেজোলিউশনের ছবি পাঠাবে। এটি মেঘের আড়ালে এমনকি অন্ধকারেও দেখার ক্ষমতা রাখে। এটি হবে সবচেয়ে ব্যয়বহুল আর্থ ইমেজিং স্যাটেলাইট।