শ্রীমদ ভগবত্ গীতা, যা গীতা নামেই বেশি পরিচিত, হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের কাছে অন্যতম উল্লেখযোগ্য শাস্ত্রীয় গ্রন্থ। গীতায় ৭০০-রও বেশি শ্লোক গ্রন্থিত রয়েছে। ভারতীয় মহাকাব্য মহাভারতের অংশ হল গীতা। আমাদের জীবন কী করা উচিত এবং কী করা উচিত নয়, সেই সম্পর্কে গীতায় বহু অমূল্য উপদেশ দেওয়া আছে। বলা হয়ে থাকে আমাদের জীবনের শ্রেষ্ঠ দর্শন হল গীতা। গীতা আমাদের জীবনে চলার সঠিক পথ দেখায়। জীবনের সব সমস্যার সমাধান গীতায় খুঁজে পাওয়া যায়।
দেখে নিন নিজের প্রেম জীবনকে আরও উন্নত করার জন্য গীতায় বর্ণিত পাঁচটি উপদেশ
ভগবত্ গীতা আত্ম উপলব্ধির জন্য উত্সাহ দেয়। নিজেকে চিনতে না পারলে আমাদের পক্ষে অন্য মানুষকে জানা সম্ভব নয়। কিন্তু আমরা বেশিরভাগই নিজেকে ভালো ভাবে না জেনেই গোটা জীবন কাটিয়ে দিই। গীতা বলছে অন্যের সঙ্গে সুস্থ সম্পর্ক গড়ে তুলতে হলে আগে নিজের চাওয়া পাওয়া, ভয়, ইচ্ছে, শক্তি, দুর্বলতাগুলিকে ভালো করে জানা দরকার। নিজেকে নিজে চিনতে পারলে প্রেমের সম্পর্ককে আমরা নতুন দিশা দেখাতে পারবো।
গীতা মানুষকে জাগতিক কামনা বাসনার ঊর্ধ্বে ওঠার পরামর্শ দেয়। মনকে মোহমুক্ত করতে বলে গীতা। মোহমুক্ত হওয়ার মানে এই নয় যে আপনি কাছের মানুষকে ভালবাসবেন না। তাকে ভালোবাসবেন, তার প্রতি নিজের সব কর্তব্য করবেন। কিন্তু বদলে কোনও কিছুর আশা করবেন না। এর ফলে প্রিয় মানুষের থেকে কষ্ট পেলেও আপনি ভেঙে পড়বেন না। তাই নিজের মনকে মোহমুক্ত করুন।
সম্পর্কের প্রতি আমাদের প্রত্যেকের দায়বদ্ধতা ও কর্তব্য রয়েছে। এই কর্তব্য পালন করতে উত্সাহ দেয় গীতা। নিজের দায়িত্বগুলো চিনুন। সঙ্গী হিসেবে, বাবা-মা হিসেবে, বন্ধু হিসেবে নিজের সব দায়িত্ব পালন করুন। সংসারে থাকলে সম্পর্কের দায়বদ্ধতা পালন করাই হল ধর্ম।
গীতার মুখ্য অংশ হল এর কর্মযোগ। গীতা স্বার্থহীন ভাবে নিজের কর্তব্য করে যাওয়ার পরামর্শ দেয়। গীতায় বলা আছে, ‘কর্ম করে যাও, ফলের আশা কোরো না।’ ভালোবাসা ও স্বার্থশূন্য় ভাবে কিছু করলে তখন সেই সম্পর্ক অন্য় মাত্রা পায়।
এই দুনিয়ার প্রতিটি প্রাণীকে সম্মান জানানোর কথা বলা আছে গীতায়। গীতায় গোটা বিশ্বের মধ্যে সৌভ্রাতৃত্বের কথা বলা আছে। তাহলেই একে অন্যের প্রতি দয়া, মায়া ও ধৈর্য্য দেখানো সম্ভব।