উত্তরপ্রদেশের বান্দায় এক দলিত মহিলাকে গণধর্ষণ ও নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনা সামনে এসেছে। মহিলার দেহটি নগ্ন এবং অনেক টুকরো অবস্থায় পাওয়া গেছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। এ ব্যাপারে ওই নারীর মেয়ে গণধর্ষণ ও হত্যার ধারায় একটি প্রতিবেদন দায়ের করেছে। তবে প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ ঘটনাটিকে নিছক দুর্ঘটনা বলে ঘোষণা করেছে। মিলের মধ্যে আটকা পড়ে ওই মহিলার মৃত্যু হয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।
বাড়ি থেকে ৫০০ মিটার দূরে একটি আটার মিল থেকে ওই মহিলার নগ্ন দেহ পাওয়া যায়। মহিলার মেয়ে ময়দা কলে পৌঁছলে ঘটনাটি জানা যায়। তিনি দরজায় ধাক্কা দিলে অভিযুক্তরা দরজা খুলে দিলেও অভিযুক্তরা তাকে ধাক্কা দিয়ে পালিয়ে যায়।
এরপর ওই মহিলার মেয়ে মায়ের রক্তে ভেজা দেহ দেখে শঙ্কা জাগিয়ে গ্রামবাসীকে ডাকেন। গ্রামবাসীরা পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়।
ঘটনাটি বান্দার গিরোয়ান থানার পাটউরা গ্রামের। ওই দলিত মহিলার মেয়ে জানান, মঙ্গলবার দুপুর 2 টার দিকে গ্রামের রাজকুমার শুক্লা তার মাকে ডেকেছিল মাটি দিয়ে আটার কলে প্লাস্টার করার জন্য। আমার মা চলে যাওয়ার 15 মিনিট পর আমি নিজেই মিলে পৌঁছালাম।
সেখানকার দরজা ভিতর থেকে বন্ধ ছিল। ভেতর থেকে চিৎকারের শব্দ আসছিল। আমি বাইরে দাঁড়িয়ে দরজা খুলতে অনুরোধ করলাম। কিন্তু 30 মিনিট পর্যন্ত দরজা খুলল না। এর পর রাজকুমার শুক্লার ভাই বাউয়া শুক্লা দরজা খুললেন, তাঁর মুখ থেকে মদের গন্ধ আসছে।
আমি ভিতরে গিয়ে দেখি রাজকুমার, তার শ্যালক রাম কৃষ্ণ শুক্লা সেখানে উপস্থিত ছিলেন, তখন রাজকুমার আমাকে ধাক্কা দিয়ে পড়ে ফেলে এবং তিনজন অভিযুক্ত ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। এর পর আমি ময়দা কল মেশিনে গেলাম। যখন দেখলাম, মায়ের নগ্ন শরীর রক্তে ভিজে গেছে। অভিযুক্তরা মায়ের শরীর থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন করেছে। তার হাতের তালুও কাটা ছিল।
নিহতের শ্যালিকা জানান, অভিযুক্ত তাকে ফোনে ডেকেছিল
নিহতের শ্যালিকা জানান, দুপুরে আমার শ্যালিকা খাবার খেতে এসেছিল। গোসল সেরে কিছু খাবার খেয়ে নিলেন। এরপর অভিযুক্তরা ফোন করে ময়দা কলে ডেকে নিয়ে যায়। ওরা বলল তাড়াতাড়ি চলে আয়। তারপর সে সাথে সাথে চলে গেল। কলে কাদা লাগাতে ডাকা হয় তাকে। কিন্তু তার হাতে কোনো কাদা ছিল না। মিলের মধ্যে আটকে থাকলে তার হাতে কাদা থাকত। তাকে হত্যা করা হয়েছে। ধারালো অস্ত্র দিয়ে মাথা বিচ্ছিন্ন করা হয়। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।
আসামি পক্ষ জানায়- ময়দা কলে আটকে মারা গেছে
তবে অভিযুক্ত পক্ষ এসব অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে আখ্যায়িত করেছে। অভিযুক্ত পক্ষ বলছে, ওই নারী ও তার স্বামী তাদের চার বিঘা জমি ভাগ করে নিয়েছেন। মঙ্গলবার সকালে রাজকুমার ওই মহিলাকে মাটি দিয়ে ময়দার কল প্লাস্টার করতে ডেকেছিলেন। এ সময় ময়দা কলে আটকে ওই নারীর মৃত্যু হয়।
সিও বলেছেন- পোস্টমর্টেম দুটি ডাক্তারের একটি প্যানেল দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে।
সিও নীতিন কুমার বলেন, বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে তিন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে তফসিলি জাতি আইন সহ ধর্ষণ ও খুনের ধারায় একটি রিপোর্ট নথিভুক্ত করা হয়েছে। এখনো কোনো আসামি গ্রেফতার হয়নি। দুই চিকিৎসকের একটি প্যানেল পোস্টমর্টেম করছে। ভিডিওগ্রাফিও করা হচ্ছে।
Read More : Delhi Crime : দিল্লিতে একদিনে ছয় খুন, প্রশ্ন উঠছে এখানকার পুলিশ ব্যবস্থা নিয়ে