প্রভাত বাংলা

site logo
Breaking News
||সানফ্রান্সিসকোতে রাহুল গান্ধীর বক্তৃতা: বলেছেন- বিজেপি এবং আরএসএসের লোকেরা ভারতের বৈচিত্র্যের জন্য হুমকি||এমপি রাজনীতি: মিশন 150 আসনের জন্য নেতাদের রাহুল গান্ধীর পরামর্শ, এমপি নির্বাচনের জন্য রোডম্যাপ প্রস্তুত||উদ্বেগজনক: গ্রিনল্যান্ডের হিমবাহগুলি তিনগুণ দ্রুত গলছে||সাবেক আইএসআই প্রধানের বিরুদ্ধে কোটি কোটি টাকা ঘুষের অভিযোগ||PM মোদির 23 দিন আগে আমেরিকা পৌঁছেছেন রাহুল গান্ধী||আগামী 4 দিন ধরে 10টি রাজ্যে বৃষ্টি : 11 দিন ধরে স্থবির বর্ষা||ভারতের রেসলিং ফেডারেশনকে সাসপেন্ড করার হুমকি দিয়েছে বিশ্ব কুস্তি ফেডারেশন||মহারাষ্ট্রের পারভানিতে মব লঞ্চিং: তিনজনকে চোর ভেবে মারধর করেছে জনতা , মারা গেছে নাবালক||পাঞ্জাবের AAP সরকারের মন্ত্রীর পদত্যাগ||Job Scam : শিক্ষক নিয়োগ কেলেঙ্কারি, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সহযোগীকে গ্রেপ্তার করেছে ইডি

এখনও নিখোঁজ ব্যারাকপুর ডাকাত মামলার হামলাকারী

Facebook
Twitter
WhatsApp
Telegram
ব্যারাকপুর

ব্যারাকপুরে ডাকাতি রুখতে এক সোনা ব্যবসায়ীর ছেলেকে গুলি করে হত্যার ঘটনা রাজ্যে তোলপাড় সৃষ্টি করেছে। বুধবার সন্ধ্যায় ব্যারাকপুরের আনন্দপুরী এলাকায় একটি সোনার দোকানে গুলি চালানোর ঘটনা ঘটে। দোকানের মালিকের ছেলে নীলাদ্রি সিং (২৯) কে গুলি করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। দোকানে ঢুকে ডাকাতি বন্ধ করে নীলাদ্রি। এরপর দুর্বৃত্তরা তাদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়। প্রতিবাদী যুবককে হত্যার ঘটনায় রাজ্যের রাজনীতিতে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। বাংলার শাসক দলের নেতা অর্জুন সিং নৃশংস সহিংসতায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তৃণমূল নেতা অর্জুনের মন্তব্য রাজ্যের রাজনীতিতে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। বিরোধীরা বরাবরই পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। বিরোধী দলীয় নেতা শুভেন্দু অধিকারীকে বারবার পুলিশ মন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করতে দেখা গেছে। এ বার পুলিশের ভূমিকায় তৃণমূলের অর্জুন যেভাবে ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন, তাতে এই পর্বে ভিন্ন মাত্রা যোগ করেছেন তিনি।

অর্জুনের ব্যারাকপুর এলাকা। এর আগেও উত্তর চব্বিশ পরগনার ওই শহরে নৃশংস হিংসার বহু ঘটনা সামনে এসেছে। এবার সেই শহরে গুলিবর্ষণের ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অর্জুন। অন্যদিকে গুলির ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। এ খবর লেখা পর্যন্ত কাউকে আটক করা যায়নি। ব্যারাকপুরের ঘটনার পর পুলিশকে নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে অর্জুন বলেন, ‘৪০ কেজির পাত্র বহন করতে পারি না। তিনি কি আবার অপরাধীদের ধরতে পারবেন?” তাঁর মন্তব্যের প্রতিবাদ করল তৃণমূল। তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ জবাব দিয়েছেন যে অর্জুনের কণ্ঠ ‘বিরোধী সুর’ গ্রহণ করেছে। তবে অর্জুন যে তার প্রতি দলের মনোভাব নিয়ে মোটেও বিরক্ত নন তা তার কথায় ধরা পড়ে। তিনি বলেন, আমি ভুল কিছু বলিনি। যা বাস্তব তাই বলেছি।

ব্যারাকপুর স্টেশনের কাছে আনন্দপুরীতে ওল্ড কলকাতা রোডে সোনার দোকান আছে। বুধবার সন্ধ্যায় ওই দোকানে গুলি চালানো হয়। এতে দোকান মালিকসহ ৩ জন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। স্বর্ণ ব্যবসায়ীর ছেলে নীলাদ্রি সিং (২৯) মারা গেছেন। পুলিশ সূত্রে খবর, বাইকে করে দোকানে আসে ৩-৪ জন দুষ্কৃতী। গয়না দেখার নামে লুটপাট শুরু করে। বাধা দিলে দুর্বৃত্তরা গুলি চালায়। ব্যারাকপুরের মেয়র উত্তম দাস জানান, হামলার সময় দোকানে ৪ জন ছিলেন। দোকানে মালিক, মালিকের ছেলে ও ২ কর্মচারী উপস্থিত থাকলে দুর্বৃত্তরা পিস্তল নিয়ে দরজা ভেঙে দেয়। তাদের যা আছে তাই দিতে বলা হয়েছে। মালিকের ছেলে নীলাদ্রী এগিয়ে এসে গুলিবিদ্ধ হন। দুর্বৃত্তরা কয়েক রাউন্ড গুলি চালায়। আহত হয়েছেন মালিক ও এক শ্রমিক। আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। খবর পেয়ে টিটাগড় থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়।

হঠাৎ এমন ঝড় আসবে তা হয়তো শের পরিবার কখনো ভাবেনি। ৮ ডিসেম্বর, নীলাদ্রির বিয়ে হয় ব্যারাকপুরের বড়পোল এলাকার বাসিন্দা ঐন্দ্রিলা মান্নার সঙ্গে। বিয়ের পর বৃহস্পতিবার ছিল তার প্রথম জামাই। কিন্তু গতকাল সন্ধ্যায় ভেঙে যায় তাদের সুখী দাম্পত্য জীবন। বিয়ের ৬ মাস পর স্বামী হারানোর শোকে পথের ঐন্দ্রিলা। বিয়ের আগে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। নীলাদ্রি ২০১৪ সালে ব্যারাকপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন। পরে সুরেন্দ্রনাথ কলেজ থেকে অনার্সসহ ভূগোল অধ্যয়ন করেন। ছোটবেলায় ছবি আঁকা শিখেছিলেন নীলাদ্রি। তিনি গহনার নকশাও করতেন। নীলাদ্রির এক বন্ধু জানান, শান্ত স্বভাবের হলেও তার ছিল বিদ্রোহী স্বভাব। বুধবার সন্ধ্যায় দুর্বৃত্তরা দোকানে ঢুকে লুটপাট শুরু করলে নীরব থাকা ছেলেটি হস্তক্ষেপ করতে এগিয়ে আসে। এরপর উদীয়মান শিল্পীকে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।

অর্জুন সিংকে ব্যারাকপুরের ‘মুকুটবিহীন রাজা’ বলা হয়। অর্জুন একসময় তৃণমূলের শক্তিশালী নেতা ছিলেন। পরে যোগ দেন বিজেপিতে। অর্জুন ২০১৯সালের লোকসভা নির্বাচনে জয়ী হন এবং সংসদ সদস্য হন। এর পর আবারও মাঠ পর্যায়ে ফিরে আসেন। আপাতত কাঠগড়ায় রয়েছেন বিজেপি সাংসদ অর্জুন। কিন্তু তৃণমূল নেতারা। ব্যারাকপুরে সোনার দোকানে গুলি চালানোর ঘটনায় পুলিশ-প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বাংলার শাসক দলের নেতা অর্জুন। ব্যারাকপুর পুলিশকে বিচারের আওতায় আনা হয়। বৃহস্পতিবার ব্যারাকপুরের সাংসদ বলেন, ‘পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে পুলিশের ভূমিকা সঠিক নয়। পুলিশ-প্রশাসনের উপর জনগণের ক্ষোভ আমাদের দলের ক্ষতি করবে।শুধু তাই নয়, রাজ্যের পুলিশ কর্মীদের ইঙ্গিতও কটাক্ষ করলেন অর্জুন। তিনি বলেন, ‘সে ৪০কেজি ওজনের পাত্র বহন করতে পারে না। তিনি যেন আবার অপরাধীদের ধরতে পারেন!

রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হলেন পুলিশ মন্ত্রী। অর্জুন তৃণমূলের নেতা। তবে তিনিই রাজ্য পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। দলের নেতার এই জঘন্য মন্তব্যের একটা ইঙ্গিতও পায়নি তৃণমূল নেতৃত্ব। তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক ও মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, “এটা সত্য যে কিছু অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটছে। এটাকে সমর্থন করা যায় না। দলের সিনিয়র নেতা হয়ে অর্জুন সিংয়ের পক্ষে বিরোধীদের নিয়ে মন্তব্য করা ঠিক নয়। সাংসদ। বৃহস্পতিবার আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, “দল কিছু ভাবতে পারে। কিন্তু জনগণ আমাকে নির্বাচিত করেছে! আমি মানুষের কথা বলতে চাই। তাদের সাথে যেতে হবে। আর আমি ভুল কিছু বলিনি। যা বাস্তব তাই বলেছি।

অর্জুন আর বিজেপির সদস্য নন। তবে ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে পদ্ম প্রতীকে লড়ে সাংসদ নির্বাচিত হন। অর্জুনের মন্তব্যকে গুরুত্ব দিচ্ছে না রাজ্য বিজেপি। বঙ্গীয় বিজেপির অন্যতম মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেছেন, “তিনি বিজেপিতে এসে তৃণমূলের বিশ্বাসঘাতক হয়েছিলেন। বিজেপি সাংসদ হওয়ার পর তিনি তৃণমূলে চলে গিয়েছিলেন এবং বিশ্বাসঘাতক হয়েছিলেন। তাঁর কথার কোনও রাজনৈতিক তাৎপর্য নেই।”

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর