Recruitment Scam : একদিকে নিয়োগ দুর্নীতির রহস্য উদঘাটনে কুন্তল ঘোষ ও তাপস মণ্ডলকে দীর্ঘক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। অন্যদিকে, ইডি কুন্তলের বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া ডায়েরিগুলির পাশাপাশি কিছু খাতা এবং তিনটি পেনড্রাইভ খতিয়ে দেখছে যে দুর্নীতির টাকা কার কাছে গেছে তার সূত্র খুঁজে বের করতে।
মঙ্গলবার সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে ওয়েস্ট বেঙ্গল টিচার্স ট্রেনিং অ্যাচিভারস অ্যাসোসিয়েশন কর্তা তাপসকে কুন্তলের মুখোমুখি করা হয়েছিল, যিনি ইডির হাতে ধরা পড়েছিলেন। গত কয়েকদিনে তাপস ও কুন্তল একে অপরের বিরুদ্ধে টাকা নেওয়ার অভিযোগ তোলেন। তাপস কুন্তলের ফ্ল্যাটে গিয়েছিলেন কি না, যেখানে ইডি গত সপ্তাহে দীর্ঘ তল্লাশি চালিয়েছিল তা নিয়ে তদন্তকারীরাও দুজনের বিবৃতিতে বিভ্রান্ত। ওই দিন ওই দুই জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
সকালে সিজিও কমপ্লেক্সে ঢোকার সময় তাপস বলেন, “হ্যাঁ, আমি টাকা চেয়েছি। তাকে (কুন্তল) টাকা দেওয়া হয়েছে, তাই আমি চাইব না? আমি শুধু চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে টাকা চেয়েছি যারা টাকা নিয়েছে।” কুন্তল এখন ইডি হেফাজতে। তদন্তকারীদের কাছে তিনি দাবি করেছেন যে তাপস তাঁকে ইডি-সিবিআই-এর নামে ডেকে অর্থের জন্য হুমকি দিয়েছিলেন। তিনি সেই কথোপকথনের রেকর্ড ইডি-সিবিআইকে দিয়েছেন। ইডি সূত্রে খবর, তাপসকেও কল রেকর্ড নিয়ে জিজ্ঞাসা করা হয়েছে।
কুন্তলের বাড়ি তল্লাশি করে একটি ডায়েরি, কয়েকটি নোটবুক এবং তিনটি পেনড্রাইভ পাওয়া গেছে। যা থেকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। বেশ কয়েকজনের নামও শনাক্ত করেছে তদন্তকারীরা। এ বিষয়ে এদিন দুজনকে প্রশ্ন করা হয়। সাংকেতিক ভাষায় ডায়েরিতে বা অ্যাকাউন্টে যাদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে, তদন্তকারীরা তাদের সম্পর্কে জানতে চান। এছাড়া উদ্ধার হওয়া পেনড্রাইভ ও অন্যান্য ইলেকট্রনিক ডিভাইসের তথ্য পেতে সাইবার বিশেষজ্ঞদের সহায়তা নেওয়া হচ্ছে।
ইডি সূত্রের খবর, এ দিন তাপস ও কুন্তলকে প্রথমবার আলাদা করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। দুইজনকে এক ঘণ্টা মুখোমুখি বসিয়ে দ্বিতীয় দফায় তাদের সামনে উদ্ধারকৃত নথি নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তদন্তকারীরা তাদের দেওয়া তথ্য রেকর্ড করেছেন।
Read more : MLA Asit Majumdar : তৃণমূল বিধায়কের পা টিপে দিচ্ছেন তৃণমূলনেত্রী! ছবি ভাইরাল হতেই বিতর্ক
তাপস মাঝেমধ্যে কুন্তলের ফ্ল্যাটে যেতেন বলে অভিযোগ। সেখানে বসবাস করতেন! এদিন সাংবাদিকরা তাপসকে প্রশ্ন করেন- আপনার ব্যবহৃত ইনসুলিন ওই ফ্ল্যাটে পাওয়া গেছে? আপনি কি কুন্তলের ফ্ল্যাটে থাকতেন? তার উত্তর ছিল, “না, না, আমি কখনো ছিলাম না। এটাই প্রমাণ হোক।” এরপর জিজ্ঞাসা করা হয় তিনি নীলাদ্রি ঘোষকে চেনেন কি না। তাপস বলল, “হ্যাঁ জানি। পরিচিত। আমার কাছে আসতেন।” কুন্তল দাবি করেছেন যে তাপস মণ্ডল, গোপাল দলপতি এবং নীলাদ্রি ঘোষ তাকে ফাঁসানোর ষড়যন্ত্র করেছিলেন। তারা কুন্তলের কাছে টাকা দাবি করছিল। এ দিন তাপস ও কুন্তলকে সামনাসামনি জেরা করে ইডি জানতে চেয়েছে, কেন কুন্তলকে ফাঁসি দিতে চলেছেন ওই তিনজন? তদন্তকারীরা বিশ্বাস করেন যে এই চতুর্ভুজ রহস্য ফাটলে দুর্নীতির প্যান্ডোরার বাক্স খুলতে পারে।