Kanthi : ধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্ত কাঁথি তৃণমূলের ছাত্রনেতাকে গ্রেফতার করতে বলেছে হাইকোর্ট। তা সত্ত্বেও পুলিশ কেন তাকে গ্রেপ্তার করেনি, তা জানতে চেয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজশেখর মন্থা। তদন্তকারী পুলিশ সদস্যের কাছে তাঁর প্রশ্ন, ‘কেন গ্রেফতার করা হল না? আপনি জানেন না অভিযুক্ত কোথায়?” মঙ্গলবার ভরা আদালতে বিচারপতি মন্থা তুলোধোনা কাঁথি ধর্ষণ মামলার তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রুমা মণ্ডল আদালতে উপস্থিত ছিলেন। বিচারপতি মন্থা জনতার সামনে তাকে সতর্ক করে বলেন, সংশোধন করুন, অন্যথায় আপনার বিরুদ্ধে অনেক কিছু হতে পারে।
কাঁথির ধর্ষণের ঘটনায় মঙ্গলবার আদালতে শুনানি হয়। এই ঘটনায় নির্যাতিতার পরিবার কাঁথি তৃণমূলের ছাত্রনেতা শুভদীপ গিরির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে। ১০ জানুয়ারি নির্যাতিতার বাবা-মা কাঁথি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। তার নয় দিনের মধ্যে, তারা কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় যে তারা কাঁথি পুলিশের তদন্তে বিশ্বাস করে না। ১৯ জানুয়ারি কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করা হয়। এরপর পাঁচ দিন কেটে গেছে। আসামিদের গ্রেপ্তারের নির্দেশও দিয়েছেন আদালত। তা সত্ত্বেও পুলিশ শুভদীপকে গ্রেফতার না করায় মঙ্গলবার পুলিশের তদন্ত নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন বিচারপতি মন্থা। মঙ্গলবার তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তাকে তিনি বলেন, ‘আপনি সঠিকভাবে তদন্ত করছেন না। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তাকে (শুভদীপ) গ্রেফতার করুন।
ঘটনার সূত্রপাত গত অক্টোবরে। নির্যাতিতার পরিবারের অভিযোগ, বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সুবোধদীপ তাদের মেয়ের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করে। মোবাইল ফোনে একান্ত মুহূর্তের বেশ কিছু ছবিও তুলেছেন তিনি। কিন্তু পরে, সুবোধদীপ বিয়ে করতে অস্বীকার করায় নির্যাতিতা তাকে ওই সব ছবি মুছে দিতে বলে। 14 অক্টোবর, শুভদীপ সেই ছবি মুছে ফেলার অজুহাতে তার প্রাক্তন বান্ধবীর সাথে দীঘার একটি হোটেলে যান। নির্যাতিতার পরিবারের অভিযোগ, সেখানে তৃণমূল ছাত্রনেতা তাঁদের মেয়েকে ধর্ষণ করেন। যার জেরে গত ১ নভেম্বর আত্মহত্যা করেন নির্যাতিতার বাবা-মা জানিয়েছেন, কাঁথি থানায় অভিযোগ দায়ের করেও কোনও সুরাহা হয়নি। আদালত তাদের নিরাপত্তা দিতে বললেও তা গ্রহণ করা হয়নি। আইন রক্ষায় একজন কনস্টেবলকে বাড়ির বাইরে রাখা হয়েছিল। কিন্তু তা সত্ত্বেও বাড়িতে ইট ছুড়ে মারা হয়েছে বলে অভিযোগ। রাতে অজ্ঞাত কয়েকজন এসে হুমকি দেয় বলেও অভিযোগ রয়েছে। মঙ্গলবার এই অভিযোগের শুনানির পর বিচারপতি মান্থা নির্দেশ দেন, নির্যাতিতার বাড়ির সামনে অবিলম্বে পুলিশ পিকেট বসাতে হবে। পরিবারকে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দিতে পুলিশকেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
তবে মঙ্গলবার বিচারপতি মন্থরের আদালতে তদন্তকারী পুলিশ অফিসার ছাড়াও বিচারকের ধমক শুনতে হয়েছে অভিযুক্তের আইনজীবীকে। আদালত শুভদীপকে গ্রেফতারের নির্দেশ দিলেও নিম্ন আদালতে শুভদীপের আগাম জামিনের আবেদন করেছিলেন ওই আইনজীবী। বিচারপতি মান্থা তার কাছে জানতে চান, “হাইকোর্টের আদেশ সত্ত্বেও আসামি আত্মসমর্পণ করেনি। বরং সে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। তাকে গ্রেপ্তার করার কথা ছিল। এখন তারা বলছে আগাম জামিনের আবেদন করা হয়েছে। আগাম জামিনের আবেদন করা হলো কীভাবে? আদালতের আদেশ?
Read more : Birbhum : পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে নিশানায় ‘দিদির দুত’, বীরভূমে তৃণমূল বিধায়কের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ
পুলিশ কর্মকর্তা ও অভিযুক্তের আইনজীবী সেভাবে বিচারকের প্রশ্নের জবাব দিতে পারেননি। আগামী মঙ্গলবার ফের মামলার শুনানি হবে আদালতে। তার আগে বুধবার নিম্ন আদালতে সুবোধদীপের জামিন মামলার শুনানি হয়।