ভারতের প্রতিবেশী দেশ শ্রীলঙ্কা বর্তমানে অস্থিতিশীলতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসেকে তার পদ থেকে পদত্যাগ করতে হয়েছে এবং তার পরেও সহিংসতা থামছে না। কোথাও মন্ত্রীদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়া হচ্ছে, কোথাও সাংসদের সঙ্গে সংঘর্ষ হচ্ছে। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজাপাকসের পরিবারকে নিজের জীবন বাঁচাতে নৌ ঘাঁটিতে আশ্রয় নিতে হয়েছিল। এদিকে, ভারতের কিছু সেলিব্রিটি এই পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে তাদের দেশকে শেখার পরামর্শ দিয়েছেন। এই ব্যক্তিত্বদের মধ্যে রয়েছেন ইতিহাসবিদ রামচন্দ্র গুহ, সিনিয়র আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ এবং ব্যাঙ্কার উদয় কোটক।
উদয় কোটক টুইট করে বলেছেন যে জ্বলন্ত শ্রীলঙ্কা বলছে কী করা উচিত নয়। কোটাক মাহিন্দ্রা ব্যাঙ্কের সিইও উদয় কোটক টুইট করেছেন, “রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ চলছে এবং তা আরও কঠিন হচ্ছে। দেশগুলোর আসল পরীক্ষা এখন। বিচার বিভাগ, নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ, পুলিশ, সরকার, সংসদের মতো প্রতিষ্ঠানের শক্তি গুরুত্বপূর্ণ। যা সঠিক তা করা, পপুলিস্ট নয়, যা গুরুত্বপূর্ণ। একটি ‘জলতা লঙ্কা’ আমাদের সবাইকে বলে দেয় কী করা উচিত নয়।’ উদয় কোটকের মন্তব্যে কারও উল্লেখ নেই, তবে তার মতামতকে কেউ কেউ মোদী সরকারের পরামর্শ হিসাবেও দেখছেন। যদিও এক সময় তিনি মোদি সরকারের অন্যতম সমর্থক ছিলেন।
গুহ বলেছেন- শ্রীলঙ্কার পরিস্থিতি ভারতের জন্য সতর্কবার্তা
এদিকে, একটি অনুষ্ঠানে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে ইতিহাসবিদ রামচন্দ্র গুহ শ্রীলঙ্কার পরিস্থিতিকে ভারতের জন্য সতর্কবার্তা বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘শ্রীলঙ্কা হতে পারত এশিয়ার সবচেয়ে সমৃদ্ধ দেশ। তাদের সাক্ষরতা, স্বাস্থ্য পরিষেবা, লিঙ্গ অনুপাতের উচ্চ হার ছিল। কিন্তু সিংহল ও বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠতার কারণে এ দেশ ধ্বংস হয়ে যায়। তিনি আরও বলেন, যদি একটি ধর্ম ও একটি ভাষাকে গুরুত্ব দেওয়া হয়, তাহলে ভারতের অবস্থাও শ্রীলঙ্কার মতো হবে। একই মত প্রকাশ করেছেন আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণও। টুইটারে সংবাদপত্রের কিছু কাটিং শেয়ার করে তিনি ভারত ও শ্রীলঙ্কার পরিস্থিতির তুলনা করেছেন।
Read More :
সংবাদপত্রের কাটিং শেয়ার করে ভারতের তুলনা করেছেন প্রশান্ত ভূষণ
তিনি এর সাথে লিখেছেন, ‘গত কয়েক বছরে শ্রীলঙ্কার শাসকরা যা করেছে এবং আজ ভারতের শাসকরা যা করছে তার মধ্যে কিছু মিল দেখতে পাচ্ছেন? ভারতে কি এর পরিণতি আজ শ্রীলঙ্কার মতোই হবে?’ উল্লেখযোগ্যভাবে, শ্রীলঙ্কার পরিস্থিতি খারাপ হচ্ছে এবং অর্থনীতি এতটাই দুর্বল হয়ে পড়েছে যে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ মাত্র 50 বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে। একই সময়ে, অন্যান্য দেশ থেকে শ্রীলঙ্কার ঋণও বেড়েছে $51 বিলিয়ন।