আজকের জীবন মন্ত্র: রামায়ণে রাবণ বধের পর শ্রীরাম বিভীষণকে রাজা করেছিলেন। শ্রী রাম অযোধ্যার উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করলে বিভীষণ তাঁর জন্য পুষ্পক বিমান প্রস্তুত করেন। পুষ্পক বিমান ছিল অত্যন্ত ঐশ্বরিক, তার সব ব্যবস্থা ছিল।
শ্রী রাম, লক্ষ্মণ, সীতা এবং তাদের সমস্ত সঙ্গী পুষ্পক বিমানে বসেছিলেন। অযোধ্যার দিকে উড়তে শুরু করলেন পুষ্পক। শ্রী রাম পথের বিশেষ স্থানের কথা সকল সঙ্গীকে বলছিলেন।
কিছুক্ষণ পর পুষ্পক বিমান অযোধ্যায় পৌঁছল। শ্রী রাম দেখলেন অযোধ্যার মানুষ পুষ্পকের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। বিমানটি মাটিতে পড়েছিল। প্লেন থেকে নামার পর শ্রী রাম প্রথম যে কাজটি করেছিলেন তা হল তিনি পুষ্পককে বললেন, এখন তুমি তোমার গুরু কুবেরের কাছে যাও।
রাবণ তার সৎ ভাই কুবেরের কাছ থেকে পুষ্পক বিমান ছিনিয়ে নিয়েছিলেন। তাই শ্রী রাম পুষ্পককে কুবেরের কাছে ফিরে যেতে বললেন। পুষ্পক বিমান শ্রীরামকে প্রণাম করে তার গুরু কুবেরের কাছে গেল।
কথিত আছে যে, শ্রী রামের কাছ থেকে ফিরে আসার সময় পুষ্পক বিমান তার প্রভুর কাছে যাচ্ছে বলে খুশি হয়েছিলেন, কিন্তু পুষ্পকও শ্রী রামের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে দুঃখ পেয়েছিলেন।
Read More :
পাঠ
এই উপাখ্যানে বলা হয়েছে কিভাবে শ্রী রাম মানুষ ও জিনিসের সাথে সম্পর্কযুক্ত। শ্রী রাম জাদ এবং চেতন উভয়ের সাথে প্রেমের আচরণ করতেন। চেতন মানে মানুষ এবং জড় মানে জড় বস্তু যেমন পুষ্পক বিমান ইত্যাদি। যদিও পুষ্পক বিমান জড়, কিন্তু পুষ্পক ছিলেন ঐশ্বরিক, তাই তিনি অনেক ক্ষেত্রেই মানুষ ছিলেন। শ্রী রামেরও তার বিমানের সাথে এত ভাল সম্পর্ক যে প্লেনটিও তার থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার জন্য দুঃখ পেয়েছিল। শ্রী রাম আমাদের এই বার্তা দিচ্ছেন যে আমাদের চারপাশের নির্জীবদের যত্ন সহকারে আচরণ করা উচিত। নির্জীব জিনিস যেমন আমাদের জামাকাপড়, যানবাহন, বাসনপত্র ইত্যাদি। আমরা যদি এই বিষয়গুলোকে নম্রভাবে মোকাবিলা করি, তাহলে আমাদের প্রকৃতিতে নম্রতা বজায় থাকে।