খড়গপুর: বাংলার শাসক দল রাজ্যের 108টি পৌরসভার মধ্যে 102টিতে জিতেছে। খড়গপুর মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন (খড়গপুর পৌরসভা) এখনও তৃণমূলের হাতে। তবে এ পৌরসভার চেয়ারম্যান পদ নিয়ে নতুন সমীকরণ ঘটার সম্ভাবনা প্রবল। সম্ভবত, তৃণমূল (টিএমসি) চেয়ারম্যান পদের জন্য খড়্গপুর সদরের বিজেপি বিধায়ক এবং অভিনেতা হিরণ চট্টোপাধ্যায়কে সমর্থন করতে চলেছে। সেক্ষেত্রে সংখ্যাগরিষ্ঠ বিজয়ী কাউন্সিলরের সমর্থন থাকলে তিনিই হবেন খড়্গপুর পুরসভার চেয়ারম্যান। হিরণও এই জল্পনা থেকে সতর্ক। তিনি তার দলের সাথে দূরত্ব বজায় রেখেছেন। শুক্রবার তিনি দলের প্রতিফলন সভায় যোগ দেননি।
বাংলায় বিজেপির একাংশের সঙ্গে, বিশেষ করে দিলীপ ঘোষের গোষ্ঠীর সঙ্গে হিরণের মতপার্থক্য আর চাপা পড়েনি৷ প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের খড়্গপুর এলাকায় ভাল প্রভাব রয়েছে। ফলে নতুন বিধায়ক হিরণের সঙ্গে তাঁর ঠান্ডা লড়াই। দলের মধ্যে উত্তেজনা বেড়ে যাওয়ায় অনেক অসন্তুষ্ট নেতা প্রতিবাদে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছেড়ে চলে যান। সেই তালিকায় ছিলেন হিরণও। পরে অবশ্য দল তাঁকে শ্রদ্ধা জানিয়ে খড়্গপুরের পুরলারেই টিকিট দেয়। 33 নম্বর ওয়ার্ডে প্রার্থী হয়েছেন হিরণ চ্যাটার্জি। পৌরসভার অন্যান্য ওয়ার্ডে হিরণের প্রস্তাবিত প্রার্থী তালিকায় গুরুত্ব না দিলে বিজেপি। যাইহোক, হিরণ তার লড়াই ভালভাবে লড়েছেন এবং 33 নং ওয়ার্ড থেকে জিতেছেন। তিনি তৃণমূল প্রার্থী জহর পালের কাছে হেরেছেন। যদিও 35 আসনের পৌরসভায় তৃণমূল ২০টি আসন জিতেছে। বিজেপির দখলে 6টি ওয়ার্ড।
২রা তারিখে ফলাফল প্রকাশের পর থেকে বোর্ড গঠন নিয়ে নতুন সমীকরণ তৈরি হয়েছে। হিরণকে সমর্থন করে তৃণমূল তাঁকে চেয়ারম্যান পদে বসাতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। অবশ্য এর কারণও আছে। প্রদীপ সরকার আগে তৃণমূল পরিচালিত এই পুরসভার চেয়ারম্যান ছিলেন। তিনি বিধায়কও ছিলেন। খড়্গপুর সদরে দীর্ঘদিনের কংগ্রেস বিধায়ক জ্ঞান সিং সোহানপালের মৃত্যুর পর 2019 সালের শেষের দিকে উপনির্বাচনে তৃণমূলের প্রদীপ সরকার জিতেছিলেন। একুশে বিজেপি প্রার্থী হিরণের কাছে পরাজিত হন। এ বার 8 নম্বর ওয়ার্ড থেকে জিতলেও কালীঘাটে প্রদীপ সরকারের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ উঠেছে। বিশেষ করে দুর্নীতির অভিযোগে একাধিকবার তার মুখ পুড়েছে। ফলে তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের প্রতি একটু ক্ষুব্ধ প্রদীপ সরকার। তার চেয়ারম্যান হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। ফলে সংখ্যাগরিষ্ঠ কাউন্সিলর হিরণকে সমর্থন করলে চেয়ারম্যান হবেন তিনি।
Read More :
হিরণের সংক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়া ছিল, “সবাই যদি চায়, আমি না বলতে পারি না।” প্রসঙ্গত, এই সমর্থন নিয়ে তিনি মেয়র হলেও দল পরিবর্তনের কোনো প্রক্রিয়ায় যেতে হবে না। কারণ, বিচ্ছিন্নতার আইন বিধানসভা ও লোকসভায় প্রযোজ্য, পুরসভার ক্ষেত্রে নয়।