নয় বছর বয়সী নতুন নেতা তথাগত রায়ের দলীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করার এবং কঠোর ভাষায় ব্যর্থতার সমালোচনা করার প্রবণতা রয়েছে। তবে সম্প্রতি বাংলায় বিজেপির নানা ত্রুটি-বিচ্যুতি নিয়ে তির্যক ভাষায় তিনি ক্রমাগত তীর নিক্ষেপ করছেন। এবারের নির্বাচনে বিজেপিকে কার্যত শূন্য করাই তাঁর লক্ষ্য। রাজ্যের 108টি পৌরসভার একটিও গেরুয়া শিবিরের নিয়ন্ত্রণে আসেনি। তার পর বঙ্গ বিজেপি শুরু করছে ‘চিন্তন বৈতক’। শনিবার সেই বৈঠকের আগে, তথাগত ঘোষ আবারও দলীয় নেতৃত্বকে ব্যঙ্গ করে টুইট করেন। এতে তিনি বাংলার গেরুয়া শিবিরকে একটি উটপাখির সঙ্গে তুলনা করেছেন এবং তার তির্যক মন্তব্য – “ফ্যাটা ডিমের ফল কী হবে এবং এর সাথে”? এ প্রসঙ্গে তিনি সুধীন দত্তের ‘উটপাখি’ কবিতার লাইন উল্লেখ করেছেন।
শুক্রবার তথাগতের ট্যুইট দেখা যায়, তিনি লিখেছেন, “বিধানসভা ভোটের ফলাফলের পর বিজেপি বিপর্যয় মেনে নেয়নি এবং বলেছিল, আমরা এটি 3 থেকে বাড়িয়ে 8 করেছি! সেই উটপাখির মতো আচরণের ফল প্রায় বিলুপ্ত হয়ে গেছে। আজকের ভোটে!” তারপর তিনি সুধীন দত্তের কবিতার উল্লেখ করেন, স্পষ্টতই তিনি বাংলার বিজেপি নেতৃত্বকে উটপাখির সঙ্গে তুলনা করেছেন।
বিধানসভা ভোটের ফলের পর বিজেপি বিপর্যয় স্বীকার না করে বলেছিল, ৩ থেকে বাড়িয়ে ৭৭ তো করেছি ! সেই উটপাখির মতো আচরণের ফল হল আজ পুরভোটে প্রায় নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়া !
— Tathagata Roy (@tathagata2) March 4, 2022
এখন হচ্ছে চিন্তন বৈঠক ? সুধীন দত্তের 'উটপাখি' কবিতা থেকে উদ্ধৃত করে বলতে হয়, "ফাটা ডিমে আর তা দিয়ে কি ফল পাবে"?
108 পৌরসভা নির্বাচনে বঙ্গীয় বিজেপির পারফরম্যান্সে দিল্লির নেতারা বিরক্ত। শনিবার রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করতে আসছেন সহ-পর্যবেক্ষক অমিত মালব্য। চিন্তা সভা শুরু হবে। দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা এবং সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) বিএল সন্তোষ প্রাক-নির্বাচনে বিপর্যয়ের কারণ খুঁজে বের করতে মালভার থেকে একটি বিশদ প্রতিবেদন নেবেন। রাজ্য বিজেপির অন্যতম সাধারণ সম্পাদক এবং হুগলির সাংসদ লকেট চ্যাটার্জিও বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন। ১০৮ পৌর নির্বাচনে হেরে সন্ত্রাসের তত্ত্ব আঁকড়ে ধরেই হারের হারের কারণ দেখাতে চায় বর্তমান রাজ্য সভাপতি সুকান্ত শিবির। বাংলায় বিজেপির শাসক গোষ্ঠী দলের নিম্নস্তরের সংগঠনের পতন ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে। কিন্তু তখনই তাদের সন্ত্রাসের যুক্তি কেন্দ্রীয় নেতাদের জন্য কতটা প্রযোজ্য হবে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
Read More :
এই পরিস্থিতিতে দলের অন্যতম সিনিয়র সদস্য তথাগত রায়ের টুইট যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ। ক্রমেই নির্বাচনী লড়াইয়ে তাদের দুর্বলতা প্রকাশ পাচ্ছে। অনেকেই মনে করেন, বঙ্গীয় বিজেপি নেতৃত্ব অভ্যন্তরীণ গবেষণার মাধ্যমে সংগঠন সাজাতে কম এবং তাত্ত্বিক আলোকে বেশি আগ্রহী। তথাগত রায়ের প্রশ্ন, প্রাক-ভোটে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়ার পর এখন চিন্তন সভার প্রাসঙ্গিকতা কী?