এই সময়ে বিশ্ববাসীর চোখ ইউক্রেন আক্রমণকারী রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের প্রতিটি পদক্ষেপের দিকে থাকলেও এর প্রকৃত সুফল শুধু চীনই পাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে। ইউক্রেনে হামলার পর জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে রুশ হামলার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র ও আলবেনিয়ার পক্ষ থেকে একটি প্রস্তাব পেশ করা হয়। রাশিয়ার ভেটো পতনের ভাগ্য ছিল, কিন্তু ভারত, চীন এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত ভোটদানে বিরত থাকা একটি বড় বার্তা পাঠিয়েছে। এশিয়ার দুই পরাশক্তিকে এ ব্যাপারে রাশিয়ার পাশে দাঁড়াতে দেখা যাচ্ছে।
ইউক্রেনে হামলার পর থেকে ভারত নিরপেক্ষ অবস্থান নিয়েছে। এর কারণ রাশিয়ার সঙ্গে পুরনো বন্ধুত্ব এবং S-400 ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সরবরাহ। কিন্তু ইউক্রেনের সাথে যুদ্ধের মাঝে রাশিয়াকে সমর্থনকারী চীন আসল সুবিধা পাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে রাশিয়ার বিরুদ্ধে আনা প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ভোট দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল চীন। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয় এবং তারপর প্রতিবাদে ভোট না দিয়ে তিনি নির্বাচন থেকে বিরত থাকার সিদ্ধান্ত নেন। এভাবে তিনি অনুপস্থিত থেকে একদিকে রাশিয়াকে আগলে রেখেছেন, অন্যদিকে আমেরিকাকে খুব একটা বিরক্ত করেননি।
ইরানের সঙ্গে ৪০০ বিলিয়ন ডলারের বড় চুক্তি
শুধু তাই নয়, রাশিয়ার ওপর আরোপিত অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞায় শুধু চীনই লাভবান হচ্ছে বলে মনে হচ্ছে। একদিকে চীন রাশিয়া থেকে গম আমদানির অনুমোদন দিয়েছে, অন্যদিকে রাশিয়ার তেল ও গ্যাসের মজুদ পাওয়ার চেষ্টা করছে। পশ্চিমা দেশগুলোর কাউকে নিষিদ্ধ করে চীন কীভাবে সুবিধা পায় তার সবচেয়ে বড় উদাহরণ ইরান। গত বছর চীন ইরানের সঙ্গে ৪০০ বিলিয়ন ডলারের চুক্তি করেছে।
Read More :
চীনও ইরানের সুযোগ নিয়েছে, এখন চোখ রাশিয়ার দিকে
এর আওতায় চীন সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে তারা এতে ব্যাপক বিনিয়োগ করবে এবং বিনিময়ে নিরবচ্ছিন্নভাবে তেল সরবরাহ অব্যাহত রাখতে হবে। গত কয়েক বছরে ইরানকে চীনের ওপর নির্ভরশীল হতে দেখা গেলেও তার কোনো বিকল্প নেই। পশ্চিমা দেশগুলো থেকে রাশিয়ার ওপর এ ধরনের কঠোর নিষেধাজ্ঞা অব্যাহত থাকলে তারও কোনো বিকল্প থাকবে না এবং চীনও সস্তায় তেল-গ্যাস পেতে থাকবে। এই যুদ্ধ থেকে এটাই তার সবচেয়ে বড় সুবিধা।