গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ভ্লাদিমির পুতিন ক্রমাগত বলে আসছেন যে ইউক্রেনে হামলার কোনো পরিকল্পনা তার নেই। কিন্তু বৃহস্পতিবার সকালে গোটা বিশ্বকে চমকে দিয়ে হামলার ঘোষণা দেন তিনি। কয়েক ঘন্টার মধ্যে, রাশিয়ার সামরিক হামলায় ইউক্রেনের বেশ কয়েকটি বিমানঘাঁটি এবং বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে যায়। কিন্তু প্রতিনিয়ত রাশিয়াকে পরিণতির হুমকি দিয়ে আসা যুক্তরাষ্ট্র এর জবাবে কোনো দৃঢ় পদক্ষেপ নেয়নি। হামলার পরপরই ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বিডেনের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন। এ সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট স্পষ্ট জানিয়ে দেন যে তার পক্ষ থেকে অস্ত্র সরবরাহ অব্যাহত থাকবে। তবে ইউক্রেনে মার্কিন বা ন্যাটো বাহিনী পাঠানোর বিষয়ে কোনো কথা বলেননি তিনি।
এমতাবস্থায় প্রশ্ন উঠছে পুতিনের কৌশলে আমেরিকা কি ফেঁসে গেল? এই প্রশ্নের জবাবে প্রাক্তন কূটনীতিক বিবেক কাটজু একটি চ্যানেলের সঙ্গে আলাপচারিতায় বলেন, ‘অবশ্যই আমেরিকা ঘেরা মনে হচ্ছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন খুব একটা শক্তিশালী নেতা নন। এ ছাড়া ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁকেও শক্তিশালী নেতা হিসেবে স্বীকৃতি দেন না। এ ছাড়া ন্যাটো বাহিনী যুদ্ধে প্রবেশ করলে এর ভয়াবহ পরিণতি হতে পারে এবং তা হতে পারে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের ধাক্কা। এমতাবস্থায় আমেরিকাসহ ন্যাটোর সব দেশই যুদ্ধে নামা এড়িয়ে যাচ্ছে।
পুতিন ইউক্রেন আক্রমণ করার সঠিক সময় বেছে নিয়েছিলেন
পররাষ্ট্র নীতি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেন আক্রমণের সঠিক সময় বেছে নিয়েছেন। এর কারণ, আফগানিস্তান থেকে আমেরিকান বাহিনী প্রত্যাহারের পর থেকে জো বাইডেনকে ঘিরে রাখা হয়েছে। অর্থনৈতিকভাবে আমেরিকা আগের মতো পরাশক্তি নয়। চীন এবং ভারত রাশিয়ার সাথে তাদের সম্পর্কের কারণে যেকোনো ব্লক থেকে নিজেদেরকে দূরে রাখতে বেছে নিয়েছে।
Read More :
এশিয়ার দেশগুলোতে রাশিয়ার উপস্থিতি এমনকি নিষেধাজ্ঞাও থামাতে পারেনি
এছাড়া ইউক্রেনের হামলার সময়ই রাশিয়া পৌঁছেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। এ থেকে স্পষ্ট যে এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে রাশিয়ার শক্তি প্রবল। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্র, ন্যাটো দেশ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোর নিষেধাজ্ঞাও রাশিয়াকে হামলা থেকে বিরত রাখতে পারেনি। এর কারণ হচ্ছে, এই দেশগুলো যে বিষয়গুলোর জন্য নির্ভরশীল তার ক্ষতিপূরণ দিতে চীন রাশিয়ার পাশে দাঁড়িয়েছে বলে মনে হচ্ছে।